Friday, April 4, 2008
খুব বেঁচে থাকতে ইচ্ছে করে
খুব বেঁচে থাকতে ইচ্ছে করে
যখন বুড়া রহিমুদ্দিন অশক্ত হাত দুটো
পিঠে বুলিয়ে দোয়া করে -ভাল থাক সুখে থাক বড় হও ।
যখন পাশের বাড়ীর বুড়ী চাচী
একবাটি ঝাল সালুন পাঠিয়ে দেয়
অসীম মমতা মেখে ।
যখন জীবন যুদ্ধে পরাভূত
কৃষ্ণকায় ছোটখাট গাঁয়ের বধূটি
হেসে ফেলে- মাথায় আঁচল তোলে
বসতে বলে বাঁশের ভাঙ্গা চৌকিতে ।
খুব বেঁচে থাকতে ইচ্ছে করে
যখন চায়ের কাপে ধোঁয়া ওঠে
গরম চা খেয়ে জিহবা পুড়ে যায়,
যখন চশমাটা হারিয়ে যায়
হাতড়ে হাতড়ে খুঁজে বের করি অন্ধের মত ।
যখন ছোট বোনটি বায়না ধরে,
ঝগড়া করে কেঁদে ফেলে
পাঁচ টাকার একটি কয়েনের জন্য ।
যখন প্রচণ্ড জ্বরে গা পুড়ে যায়,
মায়ের মত কেউ এসে কপালে হাত রাখে ।
যখন দেরি করে ঘরে ফেরায়
বকুনি খেতে হয় একজন মমতাময়ীর ।
খুব বেঁচে থাকতে ইচ্ছে করে
যখন সোডিয়াম বাতির হলুদ আলোয়
হেঁটে যাই পিচ ঢালা রাজপথে ।
যখন দশ টাকার চকচকে নোট পেয়ে
হাড় জিড়জিড়ে ছোট্ট টোকাইটি হেসে ওঠে
গভীর আনন্দ বিস্ময় আর প্রশান্তিতে ।
খুব বেঁচে থাকতে ইচ্ছে করে
যখন আকাশে হঠাৎ মেঘেরা ভীড় জমায়
অশ্রু হয়ে ঝরে পরে পৃথিবীর বুকে ।
যখন সন্ধ্যাটা হঠাৎ বিষণ্ন হয়ে যায়-
মনে পড়ে ফেলে আসা দিনগুলোকে ।
যখন রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে যায়
উদাসী পথিকের ভাটিয়ালি সুরে ।
আমার খুব বেঁচে থাকতে ইচ্ছে করে
যখন এক পবিত্র কিশোরী আমাকে স্পর্শ করে
কাঁধে হাত রাখে
জানায়, সে আছে আজীবন আমার পাশে ।।
০১-ফেব্রুয়ারী-০৫
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment